এ পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব এই মহান রবের সৃষ্টি।
আমাদের দৃষ্টিতে যা দেখতে পাই সব কিছুর মালিক সেই মহান যিনি আমাকে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। তাঁর নিয়ামের কথা বা গুণাবলি মুখে বলে অথবা কলমে লিখে শেষ করা যাবে না।সুবিশাল আসমান, জমিন, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ,তারা,নক্ষত্র সব কিছুর মালিক একজন তিনি আমাদের মাহান প্রভু তিনি খালিক,তিনি মালিক।আর তাঁর সৃষ্টির প্রকৃতির মাঝে মানুষ ও অন্যন্যান প্রাণী বসবাস করে। মানুষ যে পরিবেশ থাকবে সে পরিবেশে বড় হবে এটা স্বাভাবিক। যেমন পানি কে আপনি যে পাত্রে রাখবেন সে পাত্রের আকার ধারণ করবে।
যদি পানি নদীতে থাকে তাকে সকলে নদীর পানি বলে,সাগরে থাকলে সাগরের পানি, খালে থাকলে খালের পানি, পুকুর থাকলে পুকুরের আকার ধারণ করে।কাদাতে থাকলে কাঁদা বা ময়লা যুক্ত পানি। নলকূপে থাকলে নলকূপের পানি,পানি বিশুদ্ধ হলে মানুষ ব্যবহার করে। কিন্তু নর্দমার পানি কখনো লোকে ব্যবহার করে না। কি কারণে আমরা নর্দমার পানি ব্যবহার করি না, তা সহজে সকলে জানি। তেমনি মানুষ রকম পরিবেশে থাকবে সেই রকম পরিবেশে মানুষ হবে এটায় প্রকৃতির নিয়ম। তাই ছেলে মেয়ে মানুষ করতে হলে সবার আগে পরিবার পরিবেশের কথা চিন্তা করতে হবে। আপনার একটি কন্যা বা পুত্র সন্তান আছে । আপনার সন্তানের জন্ম আগে তাকে নিয়ে চিন্তা করেছেন, স্বপ্ন দেখেছেন,যেমন আলেমা,ডাক্তার,ইন্জিনিয়ার,শিক্ষক, অথবা একজন আর্দশ মানুষ হিসাবে গড়ে তুলবেন ।
কিন্তু সেই বাস্তবায়ন করতে হলে কি কি করতে হবে? ছেলে মেয়ের জন্য আপনার করণীয় কি? সে বিষয়ে আপনাকে জানতে হবে। প্রথমে আপনাকে একজন ভালো মানুষ হিসাবে ছেলে মেয়ের কাছে পরিচিতি লাভ করতে হবে।আপনার আচার-আচরণ কথা বার্তা ইত্যাদি। ছেলে মেয়ে যখন আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে বা কথা বলতে পারে। সে প্রথমে তার বাবা মায়ের মুখের ভাষা গুলো সহজে মুখস্থ করে নেই। কিন্তু যদি স্বামী স্ত্রী ভাষায় যদি কোন ত্রুটি থাকে।অথবা সংসারের মাঝে যদি নিত্য দিনই ঝগড়ার লেগে থাকে এবং মুখের ভাষা এতোটাই অনুন্নত যা লোকালয়ে বলার মতো না। সে ভাষাটায় এবং আচার-আচরণ ছেলে মেয়ে খুব সহজে শিখে নিবে। এখন আমার প্রশ্ন হলো? যে শিশু সবে মাত্র কথা বলা শিখলো, সে কি আপনারে মুখে অনুন্নত ভাষা গুলো সহজে মুখস্থ করতে পারবে? অবশ্যই কেনা না? কারণ শিশু বয়সে একটি বাচ্চা মাথার স্মৃতি শক্তি থাকে অনেক, সে খুব সহজে যে কোনো বিষয় তার মাথায় আয়ত্ত করতে পারে। সেটা আমার মুখের কোন কথা নয়, বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন গবেষণায় মাধ্যমে প্রামাণীত, আপনাদের মুখের ভাষা গুলো খুব সহজে মুখস্থ করবে। কিছু দিন পর আপনি যে পরিবেশে থাকবেন অথাৎ আপনার বসবাস যে পরিবেশে হবে, সে পরিবেশের প্রভা আপনার সন্তানের উপর পড়বে। অন্য ছেলে মেয়েদের সাথে মিশার কারণে যেমন খেলাধুলার, একসাথ স্কুলে যাতায়ত ইত্যাতাদি ইত্যাদি।
আপনার অজানতে আপনার শিশুর আচারণ বিভিন্ন হবে, কারণ সে আপনার মুখের ভাষা গুলো এবং পরিবেশ থেকে শিক্ষা গুলো অনুসরণ করে অথবা হুবহুব নকল করে অন্য ছেলে মেয়েদের কাছে প্রয়োগ করছে এবং অন্য ছেলে মেয়ে গুলোর আচার-আচরণ আয়ত্ত করতেছে। তার আচরার আচরণ গুলো আপনি লক্ষ্য করতেছেন,ছোট বলে পাত্তা দিচ্ছে না। আর আপনিও মনে মনে আনন্দ উপভোগ করছে। কারণ সে প্রথম কথা বলতে শিখছে মানুষের সাথে চলতে শিখছে। কিছু দিন পর আপনার নজরে আসলো যখন তার শিখার কিছু বাকি রইলো না। তখন আপনি চলে গেলেন শাসন করতে। কঠিন শাসন, এখন শাসন করে কি হবে? এ ব্যবহার আপনার এবং পরিবেশ থেকে তার শিক্ষা । যা এখন ইচ্ছে করলেও আপনি পরিবর্তন করতে পারবে না । কারণ এটা তার পরিবার এবং পরিবেশ থেকে দেওয়া প্রথমিক শিক্ষা। এখন আপনি শাসন করতে গেলে আপনার সাথে খারাপ আচরণ করে, বাহির লোকের সাথে ও তার আচার আস্তে আস্তে এমন হতে থাকে। কারণ পরিবার দিন রাতের শাসন বারণ তার কাছে আর ভালো লাগে না।
সে স্বাধীন ভাবে চলতে চাই, আপানাদের শাসনের কারণে ঘরে ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া হয়না, বেশি শাসন করায় বাসায় আসে না।বাধ্য হয়ে তাকে প্রতিবেশি ছেলে মেয়েদের সাথে মিশতে হয়। সারা দিন অনাহারে একটি বাচ্চা কিভাবে থাকবে?কিছু দিন পাড়ার ভাই বন্ধুদের কাছ থেকে খাবার সংগ্রহ করে অথবা পাড়া দোকানে কাজ করে কিছু টাকা ইনকাম করে। টাকা ইনকাম না করতে পারলে পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে চুরি করে, প্রতিবেশি খারাপ ছেলে মেয়েদের সাথে মিশতে হয়। তার এখন যে আচরণ সেটা তার পরিবার এবং পরিবেশ থেকে। আপনি একটু সচেতন হলে আপনার শিশুর ভবিষ্যত অনেক সুন্দর হতো। শিশু বয়সে আপনি তাকে যা শিক্ষা দিয়েছেন এবং পরিবেশ যা দিয়েছে তাই সে গ্রহণ করেছে। ধরুন আপনি যদি মাটিকে কাঁদায় পরিপূর্ণ করে তাহলে যা খুশি তাই করতে পারবেন। যেমন কাদা দিয়ে চাইলে ইট, পাতিল ইত্যাদি তেরি করতে পারবেন আপনার মনের মতো করে। তেমনি ছোট ছোট শিশুদের মন নরম কাদার মতো যা শিক্ষা দিবেন তাই সে শিখবে। পক্ষান্তরে যদি পরিবার শিক্ষিত এবং আচার-আচরণ ভালো হয় ভালো পরিবেশ পায় তাহলে প্রত্যক শিশু আর্দশ মানুষ হিসাবে গড়ে উঠবে। সুতরাং বলা যায় পরিবার এবং পরিবেশ একটি শিশুর আসল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।