তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দ্রুত বদলে যাচ্ছে দেশ

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ পরিবর্তন সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি তরুণদের নানা উদ্যোগ আর প্রচেষ্টায়।
তরুণদের হাত ধরেই দেশে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে।এতে দ্রুত বদলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন খাত।
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত ও বিষয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তথ্য প্রযুক্তি ।প্রযুক্তির এই পরিবর্তনের সাথে বদলে যাবে আমাদের জীবনযাত্রাও।

আমরা এখন পৌঁছেছি তথ্য প্রযুক্তির এক চরম উন্নতির যুগে।বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তি অবিশ্বাস্যগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আর ভবিষ্যতে প্রযুক্তি পৌঁছে যাবে আরও অনন্য এক উচ্চতায়, যা আমরা সাধারণ মানুষ হয়ত কল্পনাও করতে পারছি না এ সময়ে বসে। যেখানে প্রতিনিয়তই কিছু কিছু না কিছু নতুন প্রযুক্তির সাক্ষাত মেলে আমাদের সাথে (যদিও আমরা কিছুটা পিছিয়ে)।
আর দেশ যদি তথ্য প্রযুক্তিতে উন্নত হয় তবে এ বিশ্বে এখন সেটিই উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের উন্নতির প্রশংসা ইতিমধ্যে সারা বিশ্ব থেকেই আসছে। ইতিমধ্যে মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইটসহ কয়েকটি বড় প্রাপ্তি বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অন্য রকম উচ্চতায়। ৩৬ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নিরক্ষরেখার ১১৯ দশমিক ৯ ডিগ্রিতে স্থাপিত হয় দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) বঙ্গবন্ধু-১।

বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে ফেসবুক ব্যবহারকারী ৬ কোটির বেশি। গড়ে উঠেছে এফ-কমার্স বা ফেসবুক-ভিত্তিক ব্যবসা। এর বাইরে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের একটি বড় অংশ ফ্রিল্যান্সার। দেশে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। এর বাইরে রয়েছেন সফটওয়্যার খাতের উদ্যোক্তারা। এ খাতে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় আসছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আরেক বড় অগ্রগতি হয়েছে নারীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে যুক্ত করার বিষয়টি । এ ছাড়া ই-কমার্স ও এফ-কমার্স খাত দেশে প্রসারিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নারী উদ্যোক্তাদের উপস্থিতি বাড়ছে। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) তথ্য বলছে, এখন দেশে প্রায় ২০ হাজার ফেসবুক পেজে কেনাকাটা চলছে। এর মধ্যে ১২ হাজার পেজ চালাচ্ছেন নারীরা। ফেসবুককে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে স্বল্প পুঁজিতেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠছেন নারীরা। ই-ক্যাবের তথ্যমতে, গত এক বছরে ই-কমার্স খাতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দেশে সফটওয়্যার খাতের একমাত্র সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস বা বেসিসে সদস্য কোম্পানি রয়েছে ১ হাজার ২০০টি। এর মধ্যে ৬০টি কোম্পানিতে শেয়ার ও কোম্পানির বোর্ডে রয়েছেন নারী উদ্যোক্তারা। দেশের তথ্যপ্রযুক্তিতে অন্যতম একটি খাত বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা বিপিও। খাতটিতে কাজ করছেন অন্তত ৩৫ হাজার তরুণ-তরুণী।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই সময়ে বাংলাদেশের তরুণদের এগিয়ে থাকতে এআই, মেশিন লার্নিং, বিগ ডেটার মতো আধুনিক বিষয়গুলো শেখার দিকে নজর দিতে হবে। বাংলাদেশের সম্পদ তরুণ জনশক্তি। তাঁরা তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ হলে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। এ খাতে দেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হবে। তবে এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও এখন রয়েছে। ফ্রিল্যান্সারদের দীর্ঘদিনের দাবি বিদেশ থেকে অর্থ আনার ক্ষেত্রে পেপ্যাল চালু করা করা। এ খাতে এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি। এর বাইরে কম খরচে দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাওয়ার দাবিও রয়েছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম কমলেও গ্রাহক পর্যায়ে তার সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

সম্প্রতি দেশে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড এক্সপো অনুষ্ঠানের সমাপনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘আইসিটিতে যে সফলতা আমরা দেখছি, তা ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়।’

Related posts

ইলেক্ট্রনিক্সের মজার দুনিয়ায় আমাদের বিচরণ

পরিবার ও পরিবেশ শিশুর আসল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান