কেমন হতো যদি আমাদের শরীরেও উদ্ভিদের মত ক্লোরোফিল থাকত?
আমরা যারা কম বেশি সাইন্স ফিকশন মুভি দেখেছি বা গল্প পড়েছি তাদের কাছে বিষয়টি বেশ পরিচিত। কিন্তু একবার ভাবুন তো, যদি সত্যিই কোনো মানুষের শরীরে ক্লোরফিল থাকত তাহলে বিষয়টি কেমন হতো? হয়তো গাছপালার মত আমাদের গায়ের রংও হতো সবুজ! ইন্টারেস্টিং না?
এমনকি হয়তো উদ্ভিদের মত আমরাও সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে খাবার তৈরি করতে পারতাম। তবে কি তখন আর আমাদের খাদ্যের জন্য অন্য কোনো উদ্ভিদ না প্রাণীর উপর নির্ভরশীল থাকতে হোতো না?
বিষয়টা আসলে তা নয়। একটি পূর্নাঙ্গ উদ্ভিদ সারাদিন সূর্যালোকের উপস্থিতিতে বড়জোর 200 calories বা তার কিছু পরিমাণ কম বেশি ক্যালরি উৎপাদন করে থাকে যা তার ভালোভাবে বেচে থাকার জন্য যথেষ্ট। অন্যদিকে একজন মানুষের বেচে থাকার জন্য 2000 calories বা অনেকক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি ক্যালরি প্রয়োজন। সুতরাং, বোঝাই যাচ্ছে, একজন মানু্ষের শরীরে যদি ক্লোরোফিল থাকে এবং সে যদি সারাদিন সূর্যালোকে থেকে ফটোসিন্থেসিস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তবুও তার পক্ষে এত বিপুল পরিমাণ ক্যালরি উৎপাদন সম্ভব নয়। সুতরাং, বেচে থাকার জন্য তখনও মানুষকে বাইরে থেকে কোনো না কোনো খাবার গ্রহণ করে তার ক্যালরির চাহিদা পূরণ করতে হতো।
তাই মানুষের শরীরে ক্লোরোফিল থাকলেই তাকে আর খাদ্যের জন্য অন্য কিছুর উপর নির্ভরশীল থাকতে হতো না বিষয়টি একবারেই ভুল। তবে অন্যান্য অনেকক্ষেত্রেই বিভিন্ন সুবিধা দেখা দিত।
যেমন, ফটোসিন্থেসিস এর সময় কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস এর প্রয়োজন হয়। আর কার্বন ডাই-অক্সাইড যে একটি ক্ষতিকর গ্রিনহাউজ গ্যাস সেটা তো আমরা সকলেই জানি। কাজেই উদ্ভিদের মত যদি মানুষও ফটোসিন্থেসিস শুরু করত, তাহলে বায়ুমন্ডল থেকে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস কমে যেত এবং পরিবেশ এর ক্ষয়ক্ষতিও অনেক কমে যেত। তবে এক্ষেত্রে কার্বন ডাই-অক্সাইড এর মত এত ক্ষতিকর গ্যাস মানুষের শরীরে এত দীর্ঘ সময় অবস্থান করলে তা মানুষের ক্ষেত্রেও খুব একটা কল্যাণকর হতো না!
প্রকৃতিতে কোনো কিছুই ভারসাম্যহীন নয়। আর তাই, মানুষ এবং উদ্ভিদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বায়ুতে কার্বনডাইঅক্সাইড আর অক্সিজেনেরও ভারসাম্য রয়েছে।
তবে কে বলতে পারে! ভবিষ্যতে হয়তো কখনো কৃত্রিমভাবে মানুষের শরীরেও সম্পন্ন হবে সালোকসংশ্লেষণ!