স্যার আপনি যেভাবেই হোক খুনি কে খুঁজে বের করেন বলতে বলতে চোখের পানি মুছল নিলা।
-আপনি চিন্তা করবেন না। আমরা আমাদের কাজ ঠিকমতো করছি; বললেন পুলিশ কমিশনার। আমরা খুব দ্রুতই আসল অপরাধীকে খুঁজে বের করবো। আপনি বাড়ি যান।
-পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এসেছে?
-না , যখনই আসবে আমরা জানাবো আপনাকে। আপনার জন্য কষ্টকর হলেও আপনি চেষ্টা করেন কোন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য। নয়তো আপনি ডিপ্রেসড হয়ে পড়বেন এমনিতেই আপনার অবস্থা ভালো নয়।
-জি স্যার ,আমি চেষ্টা করব ।কিন্তু আমার এই ক্ষতিটি অপূরণীয় থাকবে …….
বলে বাসায় চলে গেল নীলা।
–
একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল আকাশ এবং নীলা। সেই কলেজ লাইফের প্রেম তাদের। তারা ব্যাচমেট ছিল। একসাথে ক্লাস করার থেকে পরিচয় তাদের।নীলা খুবই পরিশ্রমী এবং বুদ্ধিমতী মেয়ে ছিল।সে কখনোই কারো উপর নির্ভরশীল ছিল না। সে টিউশনি করতো। আকাশের যখন টাকার অভাব দেখা দিত তখনই সে বুঝে যেত এবং জোরপূর্বক তাকে টাকা দিয়ে দিত।
আকাশ মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান আর নীলাদের অবস্থা আকাশের তুলনায় একটু ভালো ছিল। দিন যত যেতে লাগলো তাদের ভালবাসার বন্ধন তত দৃঢ় হতে থাকলো।
মাস্টার্স শেষ হলে নিলার পরিবার তার বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজতে থাকে। এবং আকাশ খুঁজতে থাকে চাকরি।
-খুব কষ্ট করে আকাশ চাকরি জুড়িয়েছে ,বেতন খুব স্বল্প। বাবা-মা থাকেন গ্রামে ।আকাশেরা দুই ভাই । বড় ভাই বাবা মায়ের সাথে থাকেন। এবং আকাশ তার সাফল্য অর্জনের জন্য থাকে শহরে।
নীলা পড়ালেখা শেষ করে তার চাচার মাধ্যমে ব্যাংকে চাকরি পেয়ে যায়। কিন্তু বিয়ের চাপ তাকে তাড়া করে বেড়ায়। আকাশের বেতন তত বেশি না হওয়ায় সে নীলার পরিবারকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে হিমশিম খায়। নীলা না পেরে উঠতে তার বাবা মাকে আকাশের কথা জানালো। তার পরিবার আকাশের সাথে দেখা করতে ইচ্ছা প্রকাশ করে। কিন্তু আকাশের আর্থিক অবস্থা জানতে পেরে তারা বিয়ে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। কিন্তু শেষমেশ নীলার আকাশের প্রতি ভালোবাসা এবং পাগলামি দেখে তার বাবা-মা বাধ্য হয়ে বিয়ে দেন এবং সামাজিকতা রক্ষা করেন। যদিও আকাশ এর ভদ্রতা প্রশংসনীয় ছিল তাদের কাছে।নীলা খুবই আত্মসম্মানী মেয়ে ছিল। সে তার বাবার বাসা থেকে কোন জিনিসপত্র নেয়নি। তার কথা ছিল সে তার নিজের পরিশ্রমের টাকা দিয়ে সংসার গোছাবে।
নীলা প্রাথমিকভাবে তার বেতন দিয়ে ঘরের প্রাথমিক জিনিসপত্র কিনে নেয়। তারপর আকাশকেও সে তার চাকরি রত ব্যাংকে চাকরি নিয়ে দেয়। তারা দুজন মিলে তিলে তিলে সংসার গোছানো শুরু করল। বছরখানেকের মধ্যে তাদের আয়ে ব্যাপক উন্নতি ঘটে। দুজনেই উচ্চ বেতনে প্রমোশন পান। তারা তাদের আয়ের অনেকটা জমিয়ে দু বছরের মধ্যে একটি ফ্লাট ক্রয় করে এবং থাকা শুরু করে। হঠাৎ একদিন নীলা বলে উঠলো-
-নিজের বাড়ি হলো, সংসার হল এবার নিজের ব্যবসায় এবং বাচ্চা হলেই জীবন সফল।
-ঠিক বলেছ নীলা। তাহলে আমরা আগে একটি কোম্পানি গঠন করার চেষ্টা করি ।
-কিন্তু আকাশ কোম্পানি গড়তে অনেকটা টাকা প্রয়োজন।
-তাহলে নিলা আমরা কি বাড়িটা বন্ধক রাখবো?তাছাড়া তো কোন উপায় নেই এবং এর মাধ্যমে বন্ধকী ঋণ নিতে হবে।
-ঠিক আছে তা বুঝলাম আকাশ। কিন্তু তুমি কি ভেবেছ কিসের কোম্পানি দিবে?
-হ্যাঁ, আমি ভেবেছি ।অ্যাডভারটাইজিং কোম্পানি দিলে ভালো হবে। আজকাল সব পণ্যের বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে তা দরকার হয়।
-গ্রেট আইডিয়া আকাশ! তাই করা যাক।
–
ধীরে ধীরে বিভিন্ন পদক্ষেপে তারা কোম্পানি গড়ে তুলল, লোক নিয়োগ দিল। এখন তাদের কোম্পানির যাত্রা শুরু। তাদের দুজনেরই অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বিশেষ করে নীলার সঠিক পদক্ষেপের কারণে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। নীলা দেখতে ছিল অপরূপ সুন্দরী। কিন্তু দীর্ঘদিনের অতি পরিশ্রমে তার রূপ লাবণ্য হারিয়ে গিয়েছিল। তাদের কোম্পানির নাম রাখা হয় “নীলআকাশ অ্যাডভারটাইজিং কোম্পানি লি.”
কোম্পানিতে তাদের কিছু বন্ধু-বান্ধবদেরও নিয়োগ করা হলো। আকাশের ব্যক্তিগত একজন ম্যানেজার ছিল সে আকাশের খুবই ভালো বন্ধু ছিল, তার নাম তামিম। কোম্পানি বেশ ভালো চলতে শুরু করলেও উপযুক্ত মডেল না থাকার কারণে অনেক কাজ ফেরত যাচ্ছিল। তারা তখন উদ্যোগ নেয় সুন্দর মডেলের। যার আকর্ষণীয় ব্যক্তিদের দ্বারা বিজ্ঞাপন আরও ফুটে ওঠে এবং তাদের কোম্পানির চাহিদা যেন বৃদ্ধি পায়।
তারা অনেক মডেলের অডিশন নিয়ে একজনকে পছন্দ করেন। তার নাম ছিল স্নেহা। তার অভিনয় বেশ দক্ষতা প্রকাশ পায়।
শীঘ্রই কোম্পানিটি তার সাফল্যের কাঙ্কিত পর্যায়ে পৌঁছে যায় এবং তারা তাদের সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে পারে।
আকাশ এখন অধিক ব্যস্ত মানুষ গুলোর মধ্যে একটি। নীলাকে নিয়ে সে ঘুরতে যাবে তো দূরের কথা সে তার সাথে ভালো মতো কথাও বলে না। নীলা ধীরে ধীরে বাসায় একাকীত্ব বোধ করা শুরু করে। সে আকাশকে বাচ্চা নেওয়ার ইচ্ছা জানায়। এবং আকাশ তাতে সম্মতি প্রকাশ করে। কিন্তু তাদের প্রচেষ্টা এক্ষেত্রে ব্যর্থ যাচ্ছে। তাই নীলা বেশিরভাগই বিষন্নতায় ভোগে। ডাক্তার দেখালে ডাক্তার বলে তারা স্বাভাবিক আছে ।কিন্তু এক্ষেত্রে তাদের উভয়েরই মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকার কথা জানায়। কেননা মনের সাথে শরীরের গভীর সংযোগ রয়েছে। কিন্তু আকাশ বিষয়টাতে বেশি গুরুত্ব প্রকাশ করল না। তার কাছে এখন টাকাই সব ।এবং ধীরে ধীরে তার নিলার উপর থেকে গুরুত্ব কমা শুরু হয়েছে। প্রায়ই সময় দেওয়া নিয়ে নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বেধে যেত।
ইদানিং স্নেহার আকাশকে কল করার প্রবণতা বেড়ে যেতে দেখছে নীলা। তাছাড়া যে আকাশ নীলাকে ছাড়া রাত্রে খাবার খেত না এখন সেই আকাশ রাত্রে দেরিতে বাড়ি ফিরে এবং বাহিরেই খেয়ে আসে। নীলা প্রতিদিন টেবিলে বসে থাকে খাবার নিয়ে এবং শুনে সে খেয়ে ফেলেছে। ধীরে ধীরে তাদের দ্রুত বাড়াটা নীলার মানসিক অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এবং সে আকাশকে সন্দেহ করা শুরু করে। যে আকাশকে নীলা চোখ বুজে বিশ্বাস করত এবং ভালোবাসতো এখন ভালোবাসা থাকলেও সে বিশ্বাস করতে তার দ্বিধা হচ্ছে।
নীলা একদিন তামিমের সাথে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করে এবং জিজ্ঞেস করে আকাশের বিষয়ে। কিন্তু সে বলে সে এই বিষয়ে কিছু জানে না। কিন্তু আজকাল নাকি আকাশ তার প্রত্যেক কাজে এখন স্নেহাকে পাশে রাখে এবং তার মতামতকে প্রাধান্য দেয়। নীলা কথাটা শুনে অফিস থেকে চলে এলো।
সে কথাটা শুনে মনে যা প্রশ্ন উঠছে তা থেকে বাঁচতে পারছেনা। সে সিদ্ধান্ত নিল যে সেই বিষয়টা দেখেই ছাড়বে।
সেই রাত্রে আকাশ ঘুমিয়ে পড়লে নিলা তার ফোন হাতে নেয়। কিন্তু সে দেখে আকাশে ফোনের পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করা হয়েছে।
সে পরদিন কিভাবে ফোনের অজানা পাসওয়ার্ড খুলতে হয় তা শিখে নিল এবং রাত্রে আবার যখন সে ঘুমিয়ে পড়ে তখন অনেক কষ্টে ফোনের লকটি খুলে। ফোন খুলেই দেখে স্নেহার মেসেজ।
তাদের কথোপকথন দেখে নীলার হাত থেকে ফোনটি পড়ে যায়। নীলা ড্রয়িং রুমে চলে এলো। তার হার্টবিট বেড়ে গিয়েছে সে নিজের চোখে যা দেখেছে তা বিশ্বাস করতে পারছে না। তার হাত ঠান্ডা হয়ে আসছে। সে ধপাশ করে মেঝেতে বসে পড়ল। তার জীবন যেমন থমকে গেল। তার ইচ্ছা করছে চিৎকার করে কাঁদতে কিন্তু তার চোখ দিয়ে পানি বেরোচ্ছে না। সে কেমন শক্ত হয়ে গেল । তার মনে এ প্রশ্নগুলো আসছিল যে –
কি এমন দোষ করেছিলাম আমি? আমার ভালবাসা, যত্ন, প্রতিদান ,তার জন্য করা কষ্টগুলো এগুলো কি তার জন্য যথেষ্ট হয়নি? তাকে আমি ভালোবাসা দিয়ে আকাশে তুললাম আমাকে সে মাটিতেও আজ জায়গা দিল না!
এ সমস্ত ভেবে ভিতরে ভিতরে চাপা কষ্ট নিয়ে সে সারারাত আকাশের ঘুমন্ত চেহারার দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দিল।
–
স্যার পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এসেছে। ভিকটিম এর শরীরে বিষক্রিয়া হওয়ার কারণে অর্থাৎ বিষ পান করার ফলে তার মৃত্যু হয়েছে।
-এখন প্রশ্ন হল সে ইচ্ছাকরেই বিষপান করেছে ? নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন চক্রান্ত করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে? যেহেতু সে একজন সফল ব্যবসায়ী তার শত্রু রয়েছে কিনা জানতে হবে।
দুজন অফিসার কে তার অফিসে পাঠানো হোক।
–
এদিকে আকাশ যেদিন মারা গিয়েছে সেদিন সকালে তার সাথে তার বন্ধু তামিমের ঝগড়া হয়েছিল বলে জানায় অফিসের লোকেরা। প্রকৃতপক্ষে তামিমের জ্বর হওয়ার কারণে গতরাত্রে তামিমকে দেওয়া কাজ সে সম্পূর্ণ করতে পারেনি বলে জানালেও আকাশ তাকে কটু কথা বলতে লাগলো। যদিও তার কোম্পানি এগিয়ে নিয়ে যেতে তামিমের অবদানও কম নয়। তাই তামিম অভিমান করে অফিস ছেড়ে চলে যায়।
তামিমকে জেরা করার জন্য আনা হলো।
-আমি কিছু করিনি স্যার। আকাশ আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। আমি নিজে হতভাগ তার মৃত্যুর খবর শুনে। তাই আমিই সামলাচ্ছি এখন তার অফিস।
-সকল অপরাধী বাঁচার জন্য মিথ্যে কথা বলে, আপনিও তাই করছেন।
-স্যার আপনাকে কিভাবে আমি প্রমাণ দিব! তবে হ্যাঁ আপনাকে সহায়তা করতে পারি।
-কেমন সহায়তা?
-আমার একটি মেয়ের উপর সন্দেহ যাচ্ছে। সে হলো আমাদের অফিসের একজন মডেল। তার সাথে আকাশের ইদানিং অনেক ওঠা বসা ছিল।
তার নাম স্নেহা।
স্নেহা কে নিয়ে আসা হল জেরা করার জন্য। সে খুব ভীত ছিল তার আচরণ দেখেই বোঝা গেল।
-আপনি আকাশের অফিসের মডেল?
-জি স্যার।
-আপনি তা ছাড়া আকাশের সম্পর্কে কি হন?
-কিছুই না।
-সত্যি কি আপনি নিজ মুখে বলবেন ? নয়ত আমরা সত্যি বের করতে জানি!
-আপনি রাগান্বিত হবেন না স্যার। আমি বলছি। আকাশ স্যারের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
-আপনি যেটাকে প্রেমের সম্পর্ক বলছেন সেটা একটা অবৈধ সম্পর্ক! কারণ তার স্ত্রী রয়েছে।
-জি স্যার, আমার ভুল হয়ে গেছে।
-আপনি আকাশকে মেরেছেন যেন তার টাকা আপনি আত্মসাৎ করতে পারেন।
-না স্যার । আমি তার টাকার প্রতি মুগ্ধ থাকলেও তাকে মারতে চাইনি। সত্যি বলছি স্যার আমাকে বিশ্বাস করুন।
-যে মহিলা টাকার জন্য এবং তার স্ত্রী আছে জানা সত্ত্বেও তার সাথে সম্পর্ক রাখে তার মত মানুষকে বিশ্বাসের অযোগ্য বলে আমি মনে করি ।
আপনি আকাশে মৃত্যুর দিন তার সাথে কতক্ষণ ছিলেন?
-স্যার সেদিন আমি অফিসে যাইনি।
-তাহলে কোথায় গিয়েছিলেন?
– ডিস্কোতে গিয়ে আমরা ড্রিঙ্কস করেছিলাম।
-এবং সেখানে অবশ্যই আপনি তার ড্রিঙ্কসে বিষ মিশিয়ে দিয়েছেন।
-স্যার আমি তা করিনি ।আপনারা বিশ্বাস না হলে ডিসকোর সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে পারেন।
-সেটা আপনার বলা লাগবে না। ডিসকো নাম এবং এড্রেস লিখুন।
ডিস্কোর ফুটেজ চেক করার পর কোন প্রকার বিষ মিশানোর দৃশ্য পাওয়া গেল না।
নিলা আবারও আসলো পুলিশ স্টেশনে।
-স্যার কোন প্রমাণ পেয়েছেন? আমার আকাশকে কে মেরেছে?
-আপাতত না।তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আকাশের বন্ধু, তার অফিসের মডেলকে জেরা করা হয়েছিল কিন্তু তারা আকাশে খুন করেনি বলে প্রমাণিত হয় ।
একটা কথা বলুন আপনি কোথায় ছিলেন ওই দিন?
-স্যার আমি আপনাদের অফিসার কে আগেই বলেছি যে আমি বাসায় ছিলাম না। আমার ফ্রেন্ডের বাসায় গিয়েছিলাম। সকালে এসে দেখি সে মেঝেতে পড়ে রয়েছে ।হসপিটালে নিয়ে যেয়ে শুনি সে আর নেই!
এটা বলে নীলা কান্না শুরু করে দিল ।
-আচ্ছা আপনি বাড়ি যান।
নীলাদের বাসার দারোয়ানকে জেরা করা হলো
দারোয়ানকে নিয়ে আসার পর:
-স্যার আকাশ বাবা কিভাবে মারা গিয়েছেন তা আমি জানি নে।
-দেখুন চাচা আপনি ভয় পাবেন না। যেহেতু সিসিটিভি ক্যামেরা নেই তাদের ফ্লাটে তাই আপনাকে আনা। মনে করে বলুন সেই দিন কোন অপরিচিত মানুষ এসেছিল কিনা!
-না স্যার। মেম সাহেব বাসার থেকে যাওয়ার পর তাদের বাসায় আকাশ বাবা ছাড়া কেউ ঢুকেনি।
-ঠিক আছে আপনি যেতে পারেন।
সিকান্দার কেস ক্লোজ করে দাও ।সে নেশাগ্রস্ত হয়ে সুইসাইড করেছে!এবং নিলাকে তা জানিয়ে দাও কারণ এছাড়া কোন উত্তর আমাদের কাছে নেই।
-হ্যালো ম্যাম , আকাশ সুইসাইড করেছে। এবং এটা ছাড়া কোন কারণ নেই আমাদের কাছে।আপনার কেস ক্লোজ করা হলো।
-ঠিক আছে, রাখুন।
নীলা দেওয়ালের টাঙানো আকাশের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে….
-কেমন আছো তুমি? খুব ভালবাসতাম তোমায় জানো। এখনো খুব ভালোবাসি। কতইনা স্বপ্ন দেখেছিলাম , সংসার সাজিয়েছিলাম। সব নিমিষে শেষ হয়ে গেল! এত ভালোবাসার পরও তুমি তো আমার কাছে থাকতেই চাইলে না। তাই তোমাকে কাছে রাখলামই না।
পাঠিয়ে দিলাম তোমাকে চিরকালের জন্য! তুমি আমাকে একা রেখে মনের ঘরে অন্য কাউকে স্থান দেবে , তাহলে আমি দুনিয়ার ঘরে তোমাকে রেখে দেওয়াটা বেমানান হয়ে যায়!
কিন্তু হৃদয়ে রেখে দিয়েছি তোমাকে সেখানে আর কেউ আসবে না। হয়তো আমাকে দুনিয়া খুনি বলবে কিন্তু বেইমান নাহ!
আমার প্রিয় জিনিসটাই ছিল তোমার ভালোবাসা। যেটা রইল না আর আমার!কি না করেছিলাম তোমার জন্য? তুমি পরবর্তীতে চাইলেও আমি নিজেকে স্বাভাবিক করতে পারতাম না। কারণ আমি এমনিতেই পাগল হয়ে গিয়েছি। নয়তো কি নিজের মেরে নিজেই কিস করি?
স্বাভাবিক জীবন আমার পক্ষে অসম্ভব তাই, তোমাকেও স্বাভাবিক রাখলাম না !
হা হা হা!!!!!
আসলেই ভালোবাসা ভয়ংকর সুন্দর তাই না?
এই বলে চোখের কোনায় আসা পানি মুছলো নিলা। এবং ছাদ থেকে লাফ দিলো।
প্রকৃতপক্ষে নীলা আকাশের অন্য কাউকে ভালোবাসার দিকটি তাকে মানসিকভাবে গভীরভাবে আঘাত করেছিল এবং অধিক বিষন্নতার একাকীত্বতার ফলে সে তার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।
এবং এভাবেই শেষ হলো দুটি হৃদয়ের দহন।