কয়েকদিন ধরে রাত জেগে ডায়েরি লিখা আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। নিঃসঙ্গতা কাটানোর অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে ডায়েরি লিখা। আমার যখন খুব বেশি কষ্ট হয় তখন আমি ডায়েরি লিখতে পছন্দ করি। কিন্তু আজ বেশি রাত জাগা ঠিক হবে না। কারণ আগামীকাল ভার্সিটিতে অরিয়েন্টেশন ক্লাস। খুব ইচ্ছে ছিলো মেডিকেল কিংবা কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার। কিন্তু সব ইচ্ছা কি পূরণ হয়? তাই তো এখন আমাকে পড়তে হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি কলেজে। নিজের ভাগ্যকে তো মেনে নিতেই হবে৷ তাই এখন আর কোনো কিছু নিয়ে আফসোস করি না।
ডায়েরি টা টেবিলে রেখে বিছানায় এসে শুয়ে পড়লাম। কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছে না। রোজ রাত জাগি বলে আমার মস্তিষ্কও একটা সময় নির্ধারণ করে ফেলেছে যে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে কিছুতেই ঘুম আসবে না। কিন্তু রাত করে ঘুমালে তো সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে পারবো না। তাই মোবাইলে এলার্ম দিয়ে দিলাম যাতে তাড়াতাড়ি উঠতে পারি৷
শুয়ে শুয়ে ভাবছি নুসরাতের কথা। একসময় কতো কথা হতো আমাদের। রাত জেগে কতো গল্পই না করতাম আমরা। অথচ আজ দুজনের পথ দুদিকে। নুসরাতের সামনে রয়েছে এক উজ্জ্বল স্বপ্ন। মেডিকেলে লেখাপড়া করে সে। কয়েক বছর পরেই হয়তো সে হয়ে যাবে একজন ডাক্তার। অথচ আমি? আমি কি কিছু হতে পারবো? আমার আদৌ কি কোনো সম্ভাবনা রয়েছে ভালো কিছু করার?
নুসরাতের সাথে যেদিন আমার শেষ কথা হয় সেদিন যেন তার কথা আমার কাছে অসহ্য মনে হয়েছিল। কিন্তু এখন সময়ের পরিক্রমায় তার কথাগুলো অত্যন্ত যৌক্তিক বলে মনে হয়। আসলে মানুষের বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বিবেকবুদ্ধিও বৃদ্ধি পায়। তাই তো কয়েকমাস আগে নুসরাতের যে কথাগুলো আমার কাছে বিষের মতো লাগতো সেই কথাগুলোই এখন অত্যন্ত যৌক্তিক মনে হয়। নুসরাত সেদিন আমায় বলেছিল, “আকিব, তোমার সাথে আমার যায় না। দেখো তুমি কোথায় আর আমি কোথায়? আমি এতোদিন হয়তো বুঝতে পারিনি তাই তোমার মতো ছেলের সাথে সম্পর্ক রেখেছি। কিন্তু তুমি ভেবে দেখো আমি এখন একজন মেডিকেলে পড়ুয়া মেয়ে আর তুমি? তোমার তো এখনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েও চান্স হয়নি। তোমার কি কোনো সম্ভাবনা আছে জীবনে ভালো কিছু করার? এইতো কয়েক বছর পরে আমি একজন ডাক্তার হয়ে যাবো। তখন আমি আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে তোমার থেকে ভালো মানের অনেক ছেলে পাবো। তুমি নিজেই বলো আমার সাথে কি তোমাকে মানাবে? তাই দয়া করে তুমি আর আমার সাথে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করো না। আমি গেলাম।”
সেদিন নুসরাতের কথাগুলো শুনে বড্ড বেশিই কান্না করেছিলাম। তবে আমি নুসরাতকে অপরাধী ভাবিনি। কারণ দোষ আমার ভাগ্যের। আমার ভাগ্য তো সেই ছোটবেলা থেকেই খারাপ৷ তাই তো খুব ছোটবেলায়ই আব্বু-আম্মু দুজনকেই হারিয়ে ছিলাম। বড় ভাই এবং আপুদের চেষ্টায় আমি এতোটুকু লেখাপড়া করেছি৷ যে ভালোভাবে কোনো নোটবুক কিনতে পারে না তার কাছে মেডিকেল কিংবা ভার্সিটিতে চান্স পাওয়া ভিখারির চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো অলিক অবাস্তব। কিন্তু তাও আমি স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু তা আর পূরণ হয়নি। তবে কষ্ট পাওয়ার পিছনে আমি কাউকে দোষারোপ করি না। দোষ তো আমার ভাগ্যেরই। তবে এটা ভেবেই কান্না করেছিলাম যাকে এতো বিশ্বাস করলাম সে কীভাবে আমাকে ছেড়ে চলে গেলো?
না, এসব ভেবে আর চোখের জল ফেলে লাভ নেই। আমাকে সব ভুলে নতুন করে সবকিছু শুরু করতে হবে। স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে হয় এবং সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে হয়। আমাকেও তাই করতে হবে।
এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম মনে নেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে শুরু করলাম এক নতুন জীবনের পথচলা। নতুন সবকিছুর সাথে মানিয়ে নিতে হবে আমাকে। নতুন কলেজ, নতুন বন্ধুবান্ধব, নতুন পরিবেশে নিজেকে খুব সহজেই মানিয়ে নিলাম। এখন আর খুব বেশি নুসরাতের কথা মনে পড়ে না। তবে ঠিক মনে পড়ে না বললে ভুল হবে আসলে আমি মনে পড়তে দেই না। নুসরাতের সাথে কথা না হলেও আমার হৃদয় জুড়ে শুধু নুসরাতই আছে।
তবে ভার্সিটির বন্ধুবান্ধদের সাথে আড্ডা দিয়ে বেশ ভালোই কাটছিলো সময়।
দেখতে দেখতে পাঁচটা বছর চলে গেলো। আসলে সুখের সময়গুলো খুব দ্রুতই চলে যায়৷ এই পাঁচটা বছরে একবারও আমার নুসরাতের সাথে দেখা হয়নি। আমি জানি না আর কখনো দেখা হবে কী না!
পরিবার থেকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। কারণ আমি এখন একটা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি। পরিবারের সবাই চাচ্ছে এখনই আমি বিয়ে টা করে নেই। কিন্তু আমার মন সায় দিচ্ছে না। এই শহরের মানুষগুলোকে চেনা বড্ড কঠিন। যার সাথে অনেক বছর পরিচয় ছিলো সেই যখন আমাকে ছেড়ে চলে গেলো সেখানে অচেনা একটা মেয়ে কি সারাজীবন আমাকে ভালোবাসতে পারবে? কিন্তু পরিবারের সবার কথা তো আমি অমান্য করতে পারি না। তাই সাত-পাঁচ না ভেবে বললাম,
-তোমরা যা ভালো মনে করো তাই করো। আমার কোনো আপত্তি নেই।
আপু জিজ্ঞেস করলেন,
-তোর পছন্দের কেউ আছে নাকি?
আমি হেসে বললাম,
-আরে না। তোমরা যাকে পছন্দ করবে আমিও তাকে পছন্দ করবো।
আমার কথা শুনে আপু খুশি হয়ে চলে গেলেন।
আগামীকাল আমার বিয়ে। কিন্তু যার সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে আমি তাকে দেখিনি। আসলে তাকে দেখার ইচ্ছে আমার ছিলো না। শুধুমাত্র পরিবারের কথায়ই তাকে বিয়ে করছি৷ কিন্তু তাই বলে মেয়েটিকে আমি আমার স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারি না। আমি নিজেই নিজেকে কথা দিলাম যে মেয়েটির সাথে কখনোই খারাপ ব্যবহার করবো না। শুনেছি মেয়েটির নাম মিতু। ভালো নাম ইসরাত জাহান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে গ্রেজুয়েট সম্পন্ন করেছে। আপুর মুখে শুনেছি মিতু দেখতে খুবই সুন্দরী৷ অবশ্য আপু সব মেয়েকেই সুন্দর বলেন। তাই নিজ চোখে না দেখে বুঝতে পারছি না মিতু দেখতে কেমন।
দেখতে দেখতে আমাদের বিয়েটা হয়ে গেলো। আমি দাঁড়িয়ে আছি আমার ঘরের সামনে। ঘরে প্রবেশ করতে কেমন যেন ভয় ভয় লাগছে। আমি বুঝতে পারছি না একজন পুরুষ মানুষ হয়েও আমার এমন অনুভূতি হচ্ছে কেন? কিন্তু তাও সাহস সঞ্চার করে ভিতরে প্রবেশ করলাম। যেতে যেতে ভাবলাম মিতুর সাথে আমি সবকিছু শেয়ার করবো। তার কাছে কোনো কিছু গোপন করবো না।
ঘরে প্রবেশ করেই দেখলাম খুব সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে ঘরটি। মিতু এসে আমাকে সালাম করলো। আমি তাকে দেখে সত্যিই অবাক হলাম। একটি মেয়ে কী করে এতো সুন্দর হতে পারে! আমি মুগ্ধ নয়নে তার দিকে চেয়ে রইলাম। তারপর তাকে খাটে বসিয়ে বললাম,
-তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে?”
মিতু আমার কথা শুনে যেন একটু অবাক হলো। আমি বুঝলাম না এখানে অবাক হওয়ার কী! তবে এটা বুঝতে পারলাম মিতু হয়তো আমার কাছে এরকম কোনো কথা শুনবে আশা করেনি।
কিন্তু আমি কীভাবে কথা শুরু করবো সেটাও ঠিক বুঝতে পারছিলাম না আর এজন্যই এরকম একটা কথা বললাম।
মিতুর অবাক চোখের চাহনি দেখে আমি বললাম,
-আমি দুঃখিত। আমার হয়তো এভাবে কথা বলা শুরু করা উচিত হয়নি। কিন্তু আমি যে কথাটি বলতে চাচ্ছি সেটি না বলে আমি স্বাভাবিক হতে পারছি না।
মিতু এবার শান্ত কণ্ঠে বলল,
-জ্বি আপনি বলুন কী বলতে চান?
আমি বললাম,
-মিতু, আমি একজনকে ভালোবাসতাম৷ আজ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগে আমাদের সম্পর্কের ইতি ঘটে। কিন্তু আমি এখনো তাকে ভুলতে পারিনি৷ মেয়েটির নাম নুসরাত। সে মেডিকেলে চান্স পেয়েছিলো বলে আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো। আমি এই পাঁচ বছরে অনেক চেষ্টা করেছি তাকে ভুলে যাওয়ার। কিন্তু আমি পারিনি। আমি ভেবেছিলাম জীবনে কখনো বিয়েই করবো না। কিন্তু পরিবারের সবার জন্যই বিয়েটি করতে হলো। তবে আমি কখনোই তোমাকে স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করবো না। বরং আমি চাইবো তুমি আমাকে সাহায্য করবে নুসরাতকে ভুলে যাওয়ার জন্য। আমরা শুধুমাত্র স্বামী-স্ত্রী নয় বরং আমরা ভালো বন্ধু হয়েও থাকবো।
আমার কথা শুনে দেখলাম মিতুর চোখে জল এবং মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। আমি বুঝলাম না সে কাঁদছে নাকি হাসছে?
মিতু শান্ত কণ্ঠে বলল,
-অবশ্যই আমি চেষ্টা করব।
আমি মিতুর চোখের জল মুছে পরম ভালোবাসায় ওকে আলিঙ্গন করলাম।
বিয়ের পরের মুহুর্ত টা ছিল খুবই মধুর। আমারা একে অপরকে খুব ভালো করে বুঝতে পারতাম। মিতুকে পাওয়ার পর আমি নুসরাতের কথা একদম ভুলেই গিয়েছিলাম। আমাদের ভালোবাসা এতো বিশাল যে অন্য কাউকে নিয়ে ভাবার সময়ও হতো না।
আমাদের ভালোবাসায় কোনো কিছুর অভাব না থাকলেও একটা জিনিসের খুবই অভাব ছিলো। আমাদের অভাব ছিলো একটি সন্তানের। বিয়ের দুই বছর পরেও আমাদের কোনো সন্তান হচ্ছিলো না। আমার খুব ইচ্ছে ছিলো আমার প্রথমে একটি কন্যা সন্তান হবে। তার সাথে আমি দুষ্টুমি করবো, খেলবো, আদর করবো। কিন্তু আল্লাহ যেন আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাকাচ্ছিলেন না। আমি প্রায় সময়ই মিতুকে বলতাম,
-মিতু, আমাদের কোনো সন্তান হচ্ছে না কেন বলো তো! ডাক্তার দেখাবো?
মিতু সবসময়ই বলতো,
-আল্লাহ যদি চান তাহলে নিশ্চয়ই হবে। তুমি ধৈর্য ধরো। ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজন নেই।
মিতুর মুখের দিকে তাকালে আমি সব কষ্ট ভুলে যাই। তাই মিতুকে ফোর্স করিনি ডাক্তার দেখাতে। তবে এটা ভেবে আমি খুশি যে মিতুর মতো এতো কেয়ারিং স্ত্রী পেয়েছি।
আজ স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর ঘরটি কেমন শূন্য শূন্য মনে হলো। আমি মিতুকে খুঁজে পেলাম না। বুঝলাম না মিতু কোথায় গেছে৷ বেডরুমে এসে দেখলাম টেবিলের ওপর একটা চিরকুট রাখা। আমার বুক টা কেমন কেঁপে উঠলো। এটা কিসের চিরকুট আর মিতুই বা কোথায়? আমি কাঁপা হাতে চিরকুটটি হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করলাম। সেখানে লিখা,
“প্রিয় আকিব, আমি জানি সন্তান না হওয়ার জন্য তোমার মনে অনেক আক্ষেপ। তাই তুমি অনেকবারই ডাক্তার দেখানোর কথা বলেছিলে। কিন্তু আমি রাজি হতাম না কারণ আমি ভাবতাম, যদি ডাক্তারের রিপোর্টে সমস্যাটি আমার ধরা পড়ে তাহলে তুমি সেটা কষ্ট হলেও হাসিমুখে মেনে নিবে। কিন্তু সমস্যাটি যদি তোমার ধরা পড়ে তাহলে তুমি চাইবে আমি যেন নতুন করে কারো সাথে সংসার করি। কারণ তুমি আমার কষ্ট সহ্য করতে পারো না। তাই আমি আজ ভাবলাম আমি একাই ডাক্তারের কাছে গিয়ে জেনে আসি সমস্যাটা আমার কী না!
ডাক্তারের রিপোর্টে ঠিক সেটাই ধরা পড়েছে যেটা আমি সন্দেহ করেছিলাম। হ্যাঁ, সমস্যাটি আমারই। ডাক্তার বলেছে আমি কোনোদিনও মা হতে পারবো না। খাটের উপর তাকিয়ে দেখো একটা রিপোর্ট রাখা আছে। বিশ্বাস না হলে সেই রিপোর্ট টা দেখতে পারো। আর আমি চাই না শুধুমাত্র আমার জন্য তুমি বাবা ডাক শুনা থেকে বঞ্চিত হও। আমি এটাও জানি যে আমি এখানে থাকলে তুমি কখনোই নতুন করে সবকিছু শুরু করতে পারবে না। তাই আমি চলে গেলাম। আমাকে খুঁজলেও পাবে না। তাই খুঁজার চেষ্টা করো না। বিদায়।
ইতি
তোমার মিতু।
আমি চিঠিটা পড়ে যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। তারপর চিৎকার করে কান্না করতে লাগলাম আর বলতে লাগলাম, “তুমি কীভাবে আমাকে ছেড়ে চলে গেলে মিতু? আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো কীভাবে? আমি মরে যাবো। আল্লাহ কেন আমাকে এতো কষ্ট দেন?”
আমার মনে হচ্ছিলো কে যেন আমার বুকের উপর পাথর রেখে দিয়েছে। আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমি বিছানায় শুয়ে পড়লাম । চোখ বন্ধ করে নিরবে কান্না করে যাচ্ছি। হঠাৎ অনুভব করলাম আমার মাথায় কেউ হাত রেখেছে। আমি চোখ খুলেই দেখলাম মিতু দাঁড়িয়ে। কিন্তু কীভাবে? আমি কি কোনো স্বপ্ন দেখছি? আমি কান্না মিশ্রিত কণ্ঠে বললাম,
-মিতু তুমি? তুমি ফিরে এসেছ? আমি স্বপ্ন দেখছি নাতো?
মিতু আমার হাতে চিমটি কেটে বলল,
-না জনাব। স্বপ্ন নয় বাস্তব। আমি কি তোমাকে ছেড়ে যেতে পারি? আমি তো একটু লুকিয়ে ছিলাম।
আমি অবাক হয়ে বললাম,
-তাহলে চিরকুট টা কেন লিখলে?
মিতু দুষ্ট মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল,
-তোমার এক্সপ্রেশন দেখতে৷ তবে আমি জানতাম না তুমি এতো বেশি কষ্ট পাবে। জানলে এরকম মজা করতাম না।
আমি মিতুর মাথাটি আমার বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম,
-আর কখনো এরকম মজা করবে না। আমার কোনো সন্তান চাই না। আমার শুধু তোমাকে চাই।
মিতু হেসে বলল,
-আরে পাগল! সন্তান হবে না কে বলেছে? এই চিরকুট টা তো মজা করে লিখেছি। আমি আজ প্রেগন্যান্সি টেস্ট করাতে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম আর এই রিপোর্টে লিখা যে আমি মা হতে চলেছি আর তুমি বাবা। এই খুশির খবর দেওয়ার আগে ভাবলাম তোমার সাথে একটু মজা করে নেই এজন্যই বানিয়ে এসব লিখেছি। ক্ষমা করে দাও প্লিজ।
আমি যেন মিতুর কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লাম। সত্যি আমি বাবা হতে চলেছি? আমার যেন বিশ্বাস হচ্ছিলো না। তাই তাড়াতাড়ি করে রিপোর্ট টা খুলে দেখলাম সত্যিই মিতুর প্রেগন্যান্সি টেস্টে পজিটিভ এসেছে। আমি মিতুকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
-আই লাভ ইউ মিতু আমাকে এতো বড় একটা সু-সংবাদ দেওয়ার জন্য।
মিতুও আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
-আই লাভ ইউ টু আকিব।
ঠিক এই মূহুর্তে আমার মনে হলো আমিই যেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী ব্যাক্তি।